Logo
HEL [tta_listen_btn]

না’গঞ্জে এবার মা-ছেলে খুন

না’গঞ্জে এবার মা-ছেলে খুন

দেশের আলো রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে রাজিয়া সুলতানা কাকলী (৪২) নামে এক বিধবা নারী ও তার ৮ বছরের ছেলে তালহাকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (৩ জুলাই) সকালে উপজেলার ব্রাক্ষ¥ন্দি ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকায় নিজ ঘর থেকে মা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাতে খাবার খেয়ে তালহা ও তার মা প্রতিদিনের মতো আলাদা ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। পাশের ঘরের মেয়ে জান্নাতি ফজরের নামাজ পড়তে উঠলে তালহাদের ঘরের দরজা খোলা দেখে ভাবে ঘরে চুরি হয়েছে। এগিয়ে গিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে ঘরের এক রুমে খাটের উপর তালহাকে গলাকাটা মৃত অবস্থায় দেখতে পায়, ঘরের অন্য রুমে তালহার মা রাজিয়া সুলতানাকে গলাকাটা মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। স্থানীয়রা জানান, ঘরে মা-ছেলে একাই বসবাস করতো। অজ্ঞাত লোকজন রাতের যেকোনো সময় মা-ছেলেকে গলাকেটে হত্যা করে। সকালে ঘরের দরজা খোলা থাকায় আশপাশের মানুষ গিয়ে তাদের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে পুলিশে খবর দিলে তারা মরদেহ উদ্ধার করে। আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুল হক হাওলাদার জানান, কাকলীর স্বামী নবীর হোসেন মারা যাওয়ার পর থেকে ঘরে মা-ছেলে একাই বসবাস করতো। রাতের কোন এক সময় মা ও ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারো সঙ্গে বিরোধ ছিল নাকি ডাকাতরা হত্যা করেছে তা এখন বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। পুলিশ লাশের সুরাতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করছে। সিআইডি ক্রাইম সিনকে সংবাদ দেয়া হয়েছে।মরদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পরিবারটি একা হয়ে গেলো
মেয়েটির স্বামী মারা যাওয়ার পর বলেছিলাম বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ছেলের দিকে তাকিয়ে কোথাও যায়নি মেয়েটি। অবশেষে মা-ছেলে একসঙ্গে চলে গেছে। দু’জনকেই ঘাতকরা কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। মেয়েটির সংসারে আর কেউ রইলো না।আহাজারি করছিলেন আর কথাগুলো বলছিলেন আড়াইহাজারে দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত রাজিয়া সুলতানা কাকলীর মা খন্দকার তাসলিমা।
খন্দকার তাসলিমা বলেন, আমার নাতি (তালহা) সারাক্ষণ আমাকে নানু নানু বলে ডাকতো। এখন আর কেউ ডাকবে না। নাতি ও আমার মেয়েকে বাঁচতে দিলো না। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে আমার মেয়েটি নিরব হয়ে যায়। তাকে সান্তনা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। স্বামীর ভিটা আঁকড়ে ধরে ছেলেকে নিয়েই তার স্বপ্ন ছিল। এখন আর কেউ রইলো না। নিহত রাজিয়ার বড় বোন শাহিনা সুলতানা বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর বোনটিকে কতবার বলেছি চলে আসার জন্য। কিন্তু সে তার স্বামীর ভিটা ছেড়ে যাবে না। তাই তার ছেলে তালহাকে নিয়ে এখানেই বসবাস করতো। দু’জনকেই মেরে ফেলেছে। কাউকেই বাঁচতে দিলো না ঘাতকরা।
ছোট বোন ফারহানা সুলতানা বলেন, আমার বোন কেমন ছিল এলাকাবাসী সবাই জানে। কারও সঙ্গে তার শত্রæতা ছিল না। কারও সঙ্গে কখনো কথা বলতো না। সবসময় পর্দা করে চলতো। আমার ভগ্নিপতি মারা যাওয়ার পর আমি সবসময় তাদের বাড়ি আসা-যাওয়া করতাম। আজ থেকে আর আসতে হবে না আমাকে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com